বাঙালি মধ্যবিত্ত সমাজ, বাংলা ভাষা ও আশরাফ-আতরাফ

ভারতের ইতিহাস
middle class bengali society bengali language and ashraf atraf
বাংলা-বিহার-উড়িষ্যা নিয়ে গঠিত "সুবে-বাংলা"র নবাব মুর্শিদকুলি ও আলিবর্দি খান নিজেদের রাজস্ব বিভাগে হিন্দু কর্মচারি নিয়োগ করেছিলেন। এর কারণ, হিন্দুরা একদিকে যেমন ছিলেন বিশ্বস্ত এবং অন্যদিকে হিসেবের কাজে দক্ষ। এভাবেই গড়ে ওঠে মধ‍্যবিত্ত বাঙালি হিন্দু সমাজ। পরবর্তীকালে পলাশির যুদ্ধের পরে নবাবের বদলে বাংলার ভাগ‍্যবিধাতার ভূমিকায় উঠে আসে ইংরেজ ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানি। ব্রিটিশরা বাংলার রাজধানী মুর্শিদাবাদ থেকে সরিয়ে নিয়ে এলো কলকাতায়। এই রাজধানী বদলের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে গেল সরকারি কাজকর্মের ভাষা এবং এরপর ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে ফারসির বদলে ইংরেজরা চালু করলো ইংরেজি ভাষা। এর ফলে ফারসি ভাষার উপর নির্ভর করে যাঁরা জীবিকা নির্বাহ করতেন, সেইসব মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষেরা বৃত্তিহীন হয়ে পড়লেন। এই দলে অবশ্য কিছু হিন্দুও ছিলেন।
যুগের সঙ্গে টিকে থাকতে মুর্শিদকুলি ও আলিবর্দির আমলে রাজস্ব বিভাগে কর্মরত হিন্দু কর্মচারিদের উত্তরসূরী পুত্র-পৌত্ররা শুরু করলেন ইংরেজি শিখতে। আর কাজ চালানোর মতো ইংরেজি আয়ত্ত্ব করে চাকরি জুটিয়ে নিলেন বিভিন্ন ব্রিটিশ দপ্তরে। বাংলায় তাঁদের হাত ধরেই তৈরি হয়ে গেল চাকুরিজীবী হিন্দু মধ‍্যবিত্ত সমাজ। খ্রিটিয় ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধেই এইসব চাকুরিজীবী বাঙালি হিন্দুরা বাংলার নবজাগরণের বার্তা বয়ে আনেন। অন্যদিকে, মুসলমানদের মধ্যে ধর্মজাগরণের প্রচেষ্টা চালিয়ে ওয়াহাবি ও ফরাজী আন্দোলন গড়ে উঠলো এবং ব্রিটিশ বিদ্বেষী ও খানিকটা হিন্দু বিদ্বেষী বলে মনে করে ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানি কঠোরভাবে এই দুই আন্দোলনকে দমন করে। এর ফলে মুসলমানদের স্বাতন্ত্র‍্যলাভের প্রচেষ্টা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে গেল।

ওয়াহাবি আন্দোলনের নেতারা "দার-উল-হার্ব" (অমুসলমানের দেশ)-কে চেয়েছিলেন "দার-উল-ইসলাম" ( মুসলমানের দেশ)-এ পরিণত করতে। আর এ কাজে ব‍্যর্থ হয়ে ফতোয়া দেন, প্রকৃত মুসলমানরা এই অভিশপ্ত দেশ ছেড়ে চলে যাক্ ইসলামিক দেশে (হিজরত)। কিন্তু বাস্তবে তা হলো না, আবার মুসলমান সমাজ ইংরেজি শিক্ষা-দীক্ষা থেকেও মুখ ফিরিয়ে নিলো। অন্যদিকে, হিন্দুরা পুরোপুরিভাবে ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠলো এবং এর ফলে হিন্দু সমাজ যতটা এগিয়ে গেল, ততটাই পিছিয়ে গেল মুসলমান সমাজ।

১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দের ৩০ শে জানুয়ারি মুসলমান সমাজে ইংরেজি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা প্রথম বলেছিলেন বিশিষ্ট বাঙালি মুসলমান আব্দুল লতিফ, কিন্তু রক্ষণশীল মুসলমান সমাজ তাঁর কথায় কান দেননি। পরে এ কথাই বললেন আলিগড়ের আরেক মাতৃভাষা উর্দু ও সরকারি কাজের ভাষা ইংরেজি জানা নেতা স‍্যার সৈয়দ আহমদ খান। তিনি মুসলমানদের ইংরেজি শিখতে উপদেশ দেবার পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষিত হিন্দু বাঙালিদের থেকে মুসলমানদের সাবধান থাকার পরামর্শ দিলেন। তাঁর মনে হয়েছিল, আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত বাঙালি হিন্দুরা একদিন শুধুমাত্র মুসলমান নয়, ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের অধিবাসীদের মাথায় বসে তাদের ইচ্ছেমতো পরিচালনা করবে। তাই তিনি রেগে বললেন, যে হিন্দু বাঙালিবাবু সামান্য পেনসিল কাটা ছুরি দেখলে ভয়ে টেবিলের তলায় সেঁধিয়ে যায়, একদিন তাঁরা সারা ভারতে আধিপত্য করবে। (--মুসলিমমানস: সংঘাত ও প্রতিক্রিয়া---ড: রশীদ আল ফারুকী)
এর ফলে যে সব অভিজাত বাঙালি মুসলমান পরিবারের মানুষজন আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছিলেন, তাঁরা স‍্যার সৈয়দ আহমদের কথায় প্রভাবিত হয়ে ভেবে নিলেন, তাঁদের উন্নতির পথে প্রধান বাধা এই বাঙালি হিন্দুরা। সেই সঙ্গে আহমদ অনুগামীদের মধ্যে তৈরি হলো আরেক ধারণা, তাঁরা ভাবলেন, তাঁরা নিম্নবর্ণের হিন্দু থেকে ধর্মান্তরিত মুসলমান নন, বরং তাঁরা হচ্ছেন আরব-পারস্যের অভিজাত মুসলমান। এর ফলে উচ্চ অভিজাত মুসলমানগণ খ্রিস্টিয় ঊনিশ শতকের বাঙালি মুসলমানদের দুটি ভাগে ভাগ করে দিলেন---আশরাফ ও আতরাফ। অভিজাতরা হলেন "আশরাফ" এবং বাকিরা "আতরাফ।"
১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে হাণ্টার কমিশনে সাক্ষ‍্য দিতে গিয়ে ফরিদপুরের অভিজাত মুসলমান নবাব বাঙালি মুসলমানের মাতৃভাষা কি, এর জবাবে জানান, আশরাফ মুসলমানের মাতৃভাষা হচ্ছে উর্দু এবং আতরাফ মুসলমানের মাতৃভাষা হলো বাংলা। এভাবেই পশ্চিমা মুসলমানরা উর্দুকে নিলো আর তাঁদের কাছে অনাদরে থেকে গেল বাংলা ভাষা। বাংলা ভাষায় যেহেতু সংস্কৃত শব্দ আছে এবং হিন্দুরাই বাংলা ভাষার প্রধান রক্ষক, সেহেতু অভিজাত মুসলমানরা বাংলা ভাষা ত‍্যাগ করতে সচেষ্ট হলেন। তবুও স‍্যার সৈয়দ আহমদের কথা অগ্রাহ্য করে বেশকিছু বাঙালি মুসলমান কবি-সাহিত্যিক খ্রিস্টিয় ঊনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধ থেকে বাংলা ভাষায় সাহিত্যচর্চা করে খ‍্যাতিমান হলেন। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন---খোন্দকার শামসুদ্দীন সিদ্দিকী, গোলাম হোসেন, শেখ আজিমদ্দী, মীর মোশাররফ হোসেন এবং অবশ্যই কাজী নজরুল ইসলাম।
পুরুষদের পাশাপাশি মুসলিম পরিবারের মেয়েরাও বাংলা সাহিত্যের জন্য কলম তুলে নিয়েছিলেন হাতে। যেমন, ত্রিপুরার সম্ভ্রান্ত বংশীয়া মহিলা ফরজুন্নেসা ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে বিশুদ্ধ বাংলা ভাষায় লেখেন তাঁর আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস "রূপ-জালাল।" এভাবেই খ্রিস্টিয় ঊনবিংশ শতাব্দীর দ্বন্দ্বমুখর সময়কাল চিহ্নিত হয়ে আছে বাংলার সামাজিক ইতিহাসে।
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3 wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus labore sustainable VHS.