দলিত নেতা যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল পাকিস্তানের আত্মজনদের ফেলে শেষ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নিয়ে বেঁচেছিলেন। বাঁচতে পারেন নি ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। কিন্তু কে এই ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত? একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা তিনি। বাঙালি আইনজীবী তিনি। আবার বাংলা ভাষার প্রথম শহীদ তিনি। সব মিলে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত সাতচল্লিশের এক স্বপ্নভঙ্গের নাম। সাতচল্লিশে দেশভাগের পর পাকিস্তানেই থেকে গিয়েছিলেন ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত এবং পঁচাশি বছরে জীবন দিয়ে তার ভয়ংকর মূল্য দেন। আজকের লেখায় প্রায় মুছে যাওয়া সেই ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। ধীরেন্দ্রনাথের জন্ম ০২/১১/১৮৮৬ তৎকালীন বাংলা প্রদেশের ত্রিপুরা জেলার (অধুনা বাংলাদেশ) ব্রাহ্মণবেড়িয়ার রামমাইল গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত কায়স্থ পরিবারে। মৃত্যু ২৯/০৩/১৯৭১.
বাবা জগবন্ধু দত্ত ছিলেন কসবা ও নবীনগর মুন্সেফ আদালতের সেরেস্তাদার। নবীনগর হাইস্কুল, কুমিল্লা কলেজ ও কলকাতার সুরেন্দ্রনাথ কলেজে লেখাপড়া করেন ধীরেন্দ্রনাথ। ১৯০৪-এ নবীনগর হাইস্কুল থেকে প্রবেশিকা, ১৯০৬-এ কুমিল্লা কলেজ থেকে এফ. এ., ১৯০৮-এ কলকাতা রিপণ কলেজ থেকে বি.এ. এবং ১৯১০-এ ওই কলেজ থেকেই বি.এল. উত্তীর্ণ হোন ধীরেন্দ্রনাথ। ১৯০৬-এ ছাত্র জীবনেই সুরবালা দাসমুন্সির সঙ্গে বিয়ে। সুরবালার বাবা ছিলেন কুমিল্লা মহকুমার মুরাদনগর থানার পূর্ব ধৈর গ্রামের বাসিন্দা এবং পেশায় আইনজীবী কৃষ্ণকমল দাসমুন্সি। বিয়ের সময় ধীরেন্দ্রনাথের বয়স ছিল ২১, সুরবালার ১৪ বছর। দীর্ঘ ৪৩ বছর সংসার জীবন কাটিয়ে সুরবালা মারা যান ১৯৪৯-এর ১২ ই আগস্ট। তাঁদের ৭ মেয়ে, ২ ছেলে। বড়ো ছেলে সঞ্জীব দত্ত ছিলেন লেখক-সাংবাদিক। মারা যান কলকাতায় ১৯৯১-এর ২৭ শে এপ্রিল।
ছোট ছেলে দিলীপ ১৯৭১-এর মার্চে শহীদ হোন পাক বাহিনীর গুলিতে। কুমিল্লার মুরাদনগর বাঙ্গুরা উমালোচন হাইস্কুলে সহকারি প্রধান শিক্ষক হিসেবে প্রায় বছর খানেক ছিলেন ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। এরপর আইনজীবী হিসেবে ১৯১১-তে যোগ দেন কুমিল্লা জেলা বারে। স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়ে বেশ কয়েকবার কারাবাস হয় তাঁর। এরপর ১৯৪৬-এ কংগ্রেসের টিকিটে ভোটে জিতে বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার সদস্য হোন। ওই বছরই পাকিস্তানের সংবিধান রচনার জন্য পূর্ববঙ্গ থেকে পাকিস্তান গণ-পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হোন। এরপর হয় দেশভাগ। ১৯৪৭-এর পর একজন অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তি হিসেবে পাক রাজনীতিতে সক্রিয় অংশ নেন ধীরেন্দ্রনাথ। তারপর আসে ১৯৪৮-এর ২৫ শে ফেব্রুয়ারি তাঁর স্বপ্নভঙ্গের দিনটি। ওইদিন পাক গণ-পরিষদের অধিবেশনের সকল কার্যবিবরণী ইংরেজি ও উর্দুর পাশাপাশি তা বাংলা ভাষাতেও রাখার দাবি জানান ধীরেন্দ্রনাথ। তাঁর যুক্তি ছিল, যেহেতু পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি জনসংখ্যাই পাকিস্তানে বেশি, সেহেতু বাংলাকে সেদেশের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করা দরকার।
কিন্তু পাক প্রধানমন্ত্রী লিয়াকৎ আলী খান তাঁর এই "সাম্প্রদায়িক বক্তব্য" নাকচ করে দেন। এ বিষয়ে লিয়াকৎ আলী খানের বক্তব্য ছিল খুব পরিস্কার: উপমহাদেশের কোটি কোটি উর্দুভাষী মুসলমানের দাবিতে পাকিস্তানের জন্ম। কাজেই সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ যে ভাষায় (বাংলা) কথা বলেন, তাকে প্রাধান্য দেওয়াটা হবে ভুল! এরপর থেকেই ধীরেন্দ্রনাথ হয়ে যান পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় শত্রু। ১৯৬৫-তে ভারত-পাক যুদ্ধের সময় গৃহবন্দি করে রাখা হয় ধীরেন্দ্রনাথকে। এরপর ১৯৭১-এর ২৯ শে মার্চ রাতে কুমিল্লার দাগি যুদ্ধপরাধী অ্যাডভোকেট আব্দুল করিমের তৎপরতায় গ্রেফতার করা হয় ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ও তাঁর ছোট ছেলে দিলীপকে। পাক হানাদার বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয় দিলীপ দত্তের। আর ধীরেন্দ্রনাথকে নিয়ে যাওয়া হয় কুমিল্লা পাক ক্যান্টনমেন্টে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সাংবাদিক অ্যান্টনি মাসকারেনহাস কুমিল্লার ১৪ নম্বর ডিভিশনের পাক সদর দপ্তরে গিয়েছিলেন তাঁর পেশাগত তাগিদে। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, পাক সেনারা গণহত্যার জন্য যে কয়েকটি পদ্ধতি নিয়েছিল, তার মধ্যে একটি ছিল বেছে বেছে হিন্দু নিধন। বলা বাহুল্য, সেই দলে পড়ে যান ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। পাক সেনারা নিজেদের কাজের জন্য বেশকিছু হিন্দু মুচি-মেথর-নাপিতকে বাঁচিয়ে রেখেছিল। এরকমই একজন ক্ষৌরকার বা নাপিত ছিলেন রমণীমোহন শীল। তাঁর স্মৃতিচারণায় ধরা পড়েছে পাক সেনানিবাসে ৮৫ বছরের বৃদ্ধ ধীরেন্দ্রনাথের উপর অমানুষিক অত্যাচারের খণ্ডচিত্র।
এ বিষয়ে রমণীমোহন শীল জানাচ্ছেন, ---বাবু (ধীরেন্দ্রনাথ) স্কুলঘরের বারান্দায় অতিকষ্টে হামাগুড়ি দিয়ে আমাকে জেজ্ঞেস করেছিলেন, কোথায় প্রস্বাব করবেন। আমি আঙুল দিয়ে ইশারায় তাঁকে প্রস্বাবের জায়গা দেখিয়ে দিই। তখন তিনি অতি কষ্টে আস্তে আস্তে হাতে একটি পা ধরে সিঁড়ি দিয়ে উঠোনে নামেন। তখন ওই বারান্দায় বসে আমি এক জল্লাদের দাড়ি কাটছিলাম। আমি বার বার বাবুর মুখের দিকে অসহায়ভাবে তাকাচ্ছিলাম বলে জল্লাদ উর্দুতে বলে, এটা একটা দেখার জিনিস নয়, নিজের কাজ কর। এরপর বাবুর দিকে আর তাকাবার সাহস পাইনি। মনে মনে শুধু ভেবেছি, বাবু জনগণের নেতা ছিলেন, আর আজ তাঁর কপালে এই দুর্ভোগ। তাঁর ক্ষত-বিক্ষত সমস্ত দেহে তুলা লাগানো। মাথায় ব্যাণ্ডেজ। চোখ ও হাত বাঁধা অবস্থায় উপর্যুপরি কয়েকদিনই বিগ্রেড অফিসে আনতে দেখি।
২০০৬-এ বর্তমান বাংলাদেশের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে তৈরি হয় একটি আবাসিক ছাত্রাবাস "ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল।" এছাড়াও কুমিল্লার জেলা প্রশাসন দপ্তর থেকে শহীদ খাজা নিজামুদ্দিন সড়ক পর্যন্ত রাস্তাটির নাম হয় "ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত সড়ক।" পরে কুমিল্লা স্টেডিয়ামের নাম হয় "ভাষা সৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়াম।"
এরপর ২০১৭-র ১৮ ই জুলাই বর্তমান বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের নামে তৈরি হয় একটি গ্রন্থাগার।
তারপর স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৭-এ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে সে দেশের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান হিসেবে ভাষা ও স্বাধীনতা আন্দোলনে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করেন। তবে ২১শে ফেব্রুয়ারি আজ আর বাংলা ভাষার প্রথম শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের নাম উচ্চারিত হয় না। ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হয়ে যান, সেদিন যেন এক মুছে যাওয়া নাম।
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
In publishing and graphic design, Lorem ipsum is a placeholder text commonly used to demonstrate the visual form of a document or a typeface without relying on meaningful content. Lorem ipsum may be used as a placeholder before final copy is available. test