বাংলার প্রথম স্বাধীন নবাব হিসেবে পরিচিত তিনি। নাম---মুর্শিদকুলি খাঁ। প্রথম জীবনে ছিলেন ব্রাহ্মণ সন্তান। ইসফাহান নগরের হাজী সফি নামে এক ব্যক্তি তাঁকে ক্রীতদাস হিসেবে কিনে নিয়ে নাম দেন "মুহম্মদ হাজী।" হাজী সফি তাঁকে পুত্রস্নেহে লালন-পালন করেন।
এরপর মালিক হাজী সফির সঙ্গে বালক মুহম্মদ হাজী যান পারস্য দেশে এবং পালক পিতার মৃত্যুর পর হিন্দুস্থানের দাক্ষিণাত্যে আসেন। সেখানে কিছুদিন বেরার প্রদেশের দেওয়ান হাজী আবদুল্লা খোরাসানির কাছে চাকরি নিয়ে প্রবেশ করেন বাদশাহী কর্মজগতে। ক্রমে সেখানে থেকে ক্ষমতা ও সম্মানিত "মনসর্" পদের অধিকারী হোন এবং মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের কাছ থেকে "করতলব খাঁ" উপাধি লাভ করেন।
এরপর করতলব খাঁ হিসেবে কিছুদিন হায়দরাবাদ প্রদেশের দেওয়ানী করেন। পরে জিয়াউল্লা খাঁ-য়ের জায়গায় বাংলার দেওয়ানী পদ নিয়ে "মুর্শিদকুলি খাঁ" উপাধি লাভ করে ১৭০০ খ্রিস্টাব্দের ১৭ ই নভেম্বর নাগাদ বাংলায় আসেন।
সে সময় বাংলার সুবাদার অর্থাৎ শাসনকর্তা ছিলেন বাদশাহ আওরঙ্গজেবের পৌত্র আজিম-উস্-শান। মুর্শিদকুলি খাঁ ঢাকায় গেলেন এবং সেখানে গিয়ে ঠিকভাবে রাজস্ব সংগ্রহ করতে লাগলেন। যে সকল জমিদার ও জায়গীরদাররা এতদিন ধরে বাদশাহকে ফাঁকি দিয়ে নিজেরাই ভোগ করতো, তাঁরা পড়লেন বিপদে। তাঁরা এবার মুর্শিদকুলির বিরুদ্ধে বাদশাহ আওরঙ্গজেবের কাছে নালিশ জানাতে লাগলেন। এমনকি, দেওয়ান মুর্শিদকুলির বিরুদ্ধে তাঁরা সুবাদার আজিম-উস-শানের মন পর্যন্ত বিষিয়ে তুললেন।
কিন্তু মুর্শিদকুলি একমনে খাজনা আদায় করে দিল্লিতে বাদশাহ আওরঙ্গজেবের কাছে পাঠাতে লাগলেন। ওদিকে তখন দাক্ষিণাত্যে মারাঠাদের সঙ্গে বাদশাহ আওরঙ্গজেবের দীর্ঘদিন ধরেই লড়াই চলছে। এর ফলে বাদশাহের রাজকোষে চরম টাকার টান। এর আগে বাংলার খাজনায় বাদশাহের খরচ কুলাচ্ছিল না। মুর্শিদকুলির পাঠানো লক্ষ লক্ষ টাকা পেয়ে বাদশাহ আওরঙ্গজেবের আর্থিক সমস্যা মিটলো।
তাই মুর্শিদকুলির বিরুদ্ধে আনা কারো কোনো অভিযোগকেই আমল দিতেন না বাদশাহ আওরঙ্গজেব। শেষে শাহজাদা আজিম-উস-শান দেওয়ান মুর্শিদকুলিকে খুন করার চেষ্টা করেন। মুর্শিদকুলি সে চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে ঢাকা ছেড়ে দেওয়ানী দপ্তর স্থানান্তরিত করে আনলেন মখ্-সুস্-আবাদ নগরে।
পরবর্তীকালে মুর্শিদকুলির নাম অনুসারে মখ্-সুস্-আবাদ নগরের নতুন নাম হলো "মুর্শিদাবাদ।" আজও এই নাম রয়েছে। দিন দিন ক্ষমতা বাড়তে লাগলো মুর্শিদকুলির। বাংলা ছাড়াও তিনি এবার ১৭০৪ খ্রিস্টাব্দের ১৮ই জানুয়ারি বিহার প্রদেশের দেওয়ান নিযুক্ত হলেন এবং সেই সঙ্গে সুবাদারের প্রতিনিধি অর্থাৎ নায়েব হলেন। এদিকে বিরক্ত হয়ে বাংলার সুবাদার আজিম-উস-শান বাংলা ছেড়ে চলে গেলেন পাটনায়। এরপর ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দে বাদশাহ আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্রদের মধ্যে সিংহাসন নিয়ে লড়াই শুরু হলে আজিম-উস্-শান নিজের পুত্র ফারুখশিয়রকে প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় রেখে নিজে দিল্লি রওনা হলেন।
এদিকে বাংলায় আরও শক্তিশালী হয়ে উঠলেন দেওয়ান মুর্শিদকুলি। তিনি দিল্লির সঙ্গে সদ্ভাব রেখে বাদশাহের কাছ থেকে সাত হাজার অশ্বারোহী সৈন্যের নেতৃত্ব এবং সেই সঙ্গে কিনে নিলেন "মুতমন্-উল্-মুলুক্-আলা-উদ্-দৌলা জাফর খাঁ বাহাদুর আসদজঙ্গ" উপাধি। ১৭২৭ খ্রিস্টাব্দের ৩০ শে জুন মুর্শিদকুলির মৃত্যু হয়। মুর্শিদকুলি মলমূত্রে পরিপূর্ণ একটি ডোবা তৈরি করেছিলেন। ব্যঙ্গ করে তার নাম দেওয়া হয়েছিল "বৈকুণ্ঠ।" খাজনা অনাদায়ী জমিদারদের সেখানে ডুবিয়ে রাখা হতো।
মুর্শিদকুলির সময় বাংলার অবস্থা কেমন ছিল, তার বিবরণ পাওয়া যায় চন্দননগরের ফরাসি কুঠিয়াল কেপলিনের (Kaepplin, 340, 461, 524, Kaeppelin, La Compagnie Indes Orientales et. F. Martin. ) লেখা প্যারিসে তাঁদের কর্তাব্যক্তিদের কাছে পাঠানো চিঠিতে।
সেখানে লেখা আছে, ---
"শাহজাদা আজিম-উস্-শান বিদ্রোহীদের দমন করার পর প্রাচ্য দেশের প্রথা অনুসারে লোকজনদের রীতিমতো শোষণ করা ছাড়া আর কোনোকিছুতেই মন দিলেন না। সকল কর্মচারীরা তাঁর দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে বাধ্য হলো। ...আওরঙ্গজেবের অত্যধিক বয়স এবং তাঁর উত্তরাধিকার নিয়ে আসন্ন প্রশ্নে গোটা সাম্রাজ্য জুড়েই অরাজকতা বেড়ে গেল। এই সুযোগে ভারপ্রাপ্ত কর্মচারীরা অর্থ সংগ্রহ করতে লাগলেন এবং জোরজবরদস্তি করে আদায় ও অবিচার করে প্রজাদের দলিত করা ছাড়া আর কিছুই খুঁজে পেল না। আমাদের (ইস্ট ইণ্ডিয়া) কোম্পানিও এর থেকে রেহাই পেল না। শাহজাদা আজিম ও বাদশাহর কাছ থেকে প্রভূত ক্ষমতা পেয়ে বাংলায় আসা নতুন দেওয়ান (মুর্শিদকুলি খাঁ) নিজেই ঘৃণ্য লুঠের দৃষ্টান্ত দেখালেন এবং প্রজাদের শোষণ করার কোনো পথ থেকেই বিরত থাকলেন না। ...গোটা প্রদেশটি ক্রমাগত গরীব হতে লাগলো, অধিক থেকে অধিকতর দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠলো টাকা। শিল্প-বাণিজ্যে মন্দা এলো। বাংলায় ব্যবসা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠলো।"
বাস্তবিকই খ্রিস্টিয় সপ্তদশ শতাব্দীর শেষ ও অষ্টাদশ শতাব্দীর শুরুতে মোগল বাদশাহ আওরঙ্গজেবের একমাত্র সম্বল হয়ে দাঁড়িয়েছিল বাংলার খাজনা। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে বৃদ্ধ আওরঙ্গজেব দিল্লি ছেড়ে সুদূর দাক্ষিণাত্যে মারাঠাদের সঙ্গে যুদ্ধে ব্যস্ত, জাঠ বিদ্রোহে ক্ষতিগ্রস্ত, রাজকোষ শূন্য, সৈন্য ও রাজকর্মচারীদের তিন বছরের বেতন বাকি, এমনকি, মোগল রাজপরিবারে পর্যন্ত অন্নের অভাব। এরকম সময়ে মুর্শিদকুলির পাঠানো বাংলার টাকাই মোগল বাদশাহকে বাঁচিয়ে রেখেছিল। বছর বছর বাংলা থেকে খাজনার টাকা আসার অপেক্ষায় দিন গুনতো বুভুক্ষু কর্মচারীর দল।
বাদশাহ আওরঙ্গজেব তাঁর মুন্সী ইনায়েতুল্লাকে দিয়ে বাংলার দেওয়ান মুর্শিদকুলিকে যে চিঠি লিখেছিলেন, তাতেও দেখা যাচ্ছে, ---
"তোপখানার যে সকল কর্মচারী নানা থানায় নিযুক্ত আছে, তারা আগের (বকেয়া ) বেতনের জন্য খুবই কাঁদছে। যদিও তাদের বেতন দেবার জন্য বাদশাহ আপনার প্রতি আজ্ঞা করেছেন, তথাপি এখনো পর্যন্ত সে অনুযায়ী কাজ হয়নি।"
এতেই আওরঙ্গজেবের আমলে রাজকোষের বেহাল অবস্থার কথা স্পষ্ট হয়ে যায়। আর সেই দু: সময়ে বাংলার খাজনার টাকাই বাঁচিয়ে রেখেছিল মোগল দরবারকে। বাংলাই ছিল তখন মোগল দিল্লির বাঁচার ঠিকানা।
তথ্যসূত্র:
1). The Oxford History of India: Vincent A. Smith.
2). প্রবাসী, ভাগ ১৪, খণ্ড ২, সংখ্যা ১, কার্ত্তিক, সন ১৩২১: যদুনাথ সরকার।
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
In publishing and graphic design, Lorem ipsum is a placeholder text commonly used to demonstrate the visual form of a document or a typeface without relying on meaningful content. Lorem ipsum may be used as a placeholder before final copy is available. test