রাজ্যের নাম "কৃষ্ণগড়", লোকমুখে রাজধানী "কিষণগড়।" পূর্বে জয়পুর, পশ্চিমে যোধপুর, দক্ষিণে মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের বাদশাহী সুবা---এই তিনদিকে ঘেরা একটি ছোট্ট রাজপুত রাজ্য এই কৃষ্ণগড়। এই কৃষ্ণগড়ের উত্তরেই একটি নগর, নাম---"রূপনগর।" রূপনগরের রাজধানী "কিষণগড়।"
বাদশাহ আওরঙ্গজেবের আমলের ঘটনা। এই রূপনগরে ছিলেন এক রাজকন্যা, নাম তাঁর---"চারুমতী।" তবে লোকে তাঁকে বলে, "রূপনগরের রাজকন্যা।" চারুমতীর পিতা ওই দেশের রাজা রূপসিংহ রাঠোর। মোগল সম্রাট শাহজাহানের অসুস্থতার খবর পেয়ে তাঁর চার পুত্র দারা, সুজা, আওরঙ্গজেব ও মুরাদের মধ্যে শুধু হয় সিংহাসন দখলের লড়াই। বৃদ্ধ শাহজাহান এই ভ্রাতৃদ্বন্দ্ব থামাতে নিজের সাম্রাজ্য চার ভাগ করে চার পুত্রের মধ্যে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাতে রাজি হোননি তৃতীয় পুত্র আওরঙ্গজেব। তাই ভাইয়ে ভাইয়ে শুরু হয়ে যায় আত্মঘাতী যুদ্ধ।
এই যুদ্ধে রূপসিংহ রাঠোর শাহজাদা দারাশুকোর পক্ষ নেন এবং আওরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে ১৬৫৯ খ্রিস্টাব্দের ২৯ শে মে সামুগড়ের যুদ্ধে মারা যান। এরপর রাজা হোন তাঁর পুত্র মানসিংহ। মানসিংহ আজীবন মোগলদের অনুগত ছিলেন।
যাই হোক, সামুগড়ের যুদ্ধে রূপসিংহ রাঠোরের মৃত্যুর পর আওরঙ্গজেব তাঁর জ্যেষ্ঠা কন্যা রূপনগরের রাজকন্যা চারুমতীকে বিয়ে করার দাবি করলেন। উদ্দেশ্য, এর ফলে যেন মৃত শত্রুর পরিবার অপমানিত হয়।
কিন্তু বেঁকে বসলেন রাজকন্যা চারুমতী। তিনি বংশ গৌরব অক্ষুন্ন রাখতে কুলপুরোহিতের হাত দিয়ে তাঁকে বিয়ে করার প্রস্তাব পাঠালেন মহারাণা রাজসিংহের কাছে। চারুমতীর প্রস্তাবে সাড়া দিলেন মহারাণা রাজসিংহ। তিনি বরযাত্রী নিয়ে সদলবলে কিষণগড়ে গিয়ে চারুমতীকে বিয়ে করলেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় আওরঙ্গজেব মহারাণা রাজসিংহের কাছ থেকে দুটি পরগণা কেড়ে নিয়ে তা হরিসিংহ দেবলিয়াকে দান করে দিলেন।
এই আদেশের বিরুদ্ধে মহারাণা রাজসিংহ বাদশাহ আওরঙ্গজেবকে পত্র মারফৎ জানালেন, ---
"বাদশাহের অনুমতি না নিয়ে আমি বিয়ে করতে কিষণগড় গিয়েছিলাম, আপনি লিখেছেন, এতে বাদশাহের প্রতি ঔদ্ধত্য দেখানো হয়েছে। কিন্তু রাজপুতের সঙ্গে রাজপুতের সম্বন্ধ বহুদিন থেকেই চলে আসছে, এতে যে কোনো বাধা হবে, এরকম আমি কল্পনা করিনি। ...সেজন্য আমি বাদশাহের অনুমতির অপেক্ষা করিনি এবং বাদশাহী এলাকায় আমি কোনোরকম উপদ্রব করিনি।"---মূল ফারসি পত্র, বীরবিনোদ, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা-৪৪০-৪৪৪.
এরপর রাজা রূপসিংহের মৃত্যুর প্রায় চার বছর পর তাঁর দ্বিতীয় কন্যার সঙ্গে আওরঙ্গজেবের পুত্র মুয়াজ্জম ওরফে শাহ আলমের বিয়ে হয় ১৬৬১ খ্রিস্টাব্দের ২৬ শে জানুয়ারি। আওরঙ্গজেবের রাজপুত নীতির আরও একটি উদাহরণ দেওয়া যাক্। আওরঙ্গজেবের প্রধান হিন্দু সেনাপতি ছিলেন যোধপুরের মহারাজা যশোবন্ত সিংহ। ১৬৭৮ খ্রিস্টাব্দের ১০ ই ডিসেম্বর আফগানিস্তানের জমরুদ গিরিপথের ফৌজদার থাকার সময় তিনি মারা যান। এর ১১ বছর আগে মারা গিয়েছিলেন আরেক অন্যতম হিন্দু মনসবদার আম্বেররাজ জয়সিংহ। এই দুই হিন্দু নেতার মৃত্যুর ফলে হিন্দুস্থান হয়ে যায় হিন্দু-নেতা শূন্য।
যোধপুরের মহারাজা যশোবন্ত সিংহের মৃত্যুর খবর দিল্লিতে আসা মাত্র মাড়োয়ার রাজ্যটি খাস করে আওরঙ্গজেব সেটিকে মোগল শাসনে আনলেন এবং মুসলমান ফৌজদার, কিলাদার, কোতোয়াল ও আমিন পাঠিয়ে যোধপুর শহরটিকে দখল করে নিলেন। এর কয়েকদিন পর ১৬৭৯ খ্রিস্টাব্দের ৯ ই জানুয়ারি মাড়োয়ারের রাজপুতদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করার উদ্দেশ্যে আওরঙ্গজেব নিজে আজমীর গেলেন।
মাড়োয়ারের রাঠোররা তখন সদ্য তাঁদের রাজাকে হারিয়ে শোকাহত, তাঁদের রাজপরিবার, সেনাবাহিনী ও নেতারা তখনও আফগানিস্তান থেকে ফেরেনি। সেখানে মোগল সেনাবাহিনী তাদের ঘিরে রেখেছে। এ অবস্থায় মোগলদের বিরুদ্ধে রাঠোররা কোনো সফল প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারলো না। আর আওরঙ্গজেবের নির্দেশে খাঁ জাহান বাহাদুরের নেতৃত্বে এক বিশাল মোগল বাহিনী ১৬৭৯ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে মাড়োয়ারে ঢুকে সেখানকার সব মন্দির ধ্বংস করে রাজধানীর তোষাখানা খুলে এবং দুর্গের মাটি খুঁড়ে মহারাজা যশোবন্ত সিংহের সমস্ত ধনসম্পদ লুঠ করতে লাগলো। আওরঙ্গজেবের সরকারি ঐতিহাসিক মুস্তাদ খাঁর লেখা "মাসীর-ই-আলমগীরী"-র মূল ফারসি গ্রন্থের ১৭২ পৃষ্ঠায় এই বিবরণ আছে।
এদিকে মহারাজা যশোবন্ত সিংহের মৃত্যুর পর তাঁর পাঁচ রাণী চিতায় সহমরণে যান। অন্য দুই রাণী তখন অন্ত: সত্ত্বা ছিলেন এবং আফগানিস্তান থেকে দেশে ফেরার পথে লাহোরে ১৬৭৯ খ্রিস্টাব্দের ১০ ই ফেব্রুয়ারি দু'জনেই একটি করে পুত্র সন্তানের জন্ম দিলেন। সন্তান দু'জনের নাম---অজিত সিংহ ও দলমন্থন। কয়েকদিন পর দলমন্থনের মৃত্যু হলো। বেঁচে রইলেন অজিত সিংহ। কিন্তু বাদশাহ আওরঙ্গজেব অজিত সিংহকে তাঁদের শত শত বছরের পিতৃপুরুষের অর্জিত রাজ্য ফেরৎ দিলেন না।
এরপর মায়ের সঙ্গে অজিত সিংহ দিল্লি এলেন। তখন আওরঙ্গজেব হুকুম করলেন, রাঠোর শিশু রাজপুত্রকে নিজের হারেম মহলে এনে রাখতে হবে এবং বড়ো হলে তাঁকে মনসব ও রাজপদ দেওয়া হবে। আর অজিত সিংহ মুসলমান হলে তবেই তিনি মাড়োয়ার রাজ্যটি ফেরৎ পাবেন।
---নুসখা-ই-দিলকষা, হস্তলিপি, পৃষ্ঠা-১৬৪
আওরঙ্গজেবের প্রস্তাব শুনে হতাশ হলেন রাঠোর প্রধানরা। তাঁদের নেতা দুর্গাদাস রাঠোর এবং তাঁর সুযোগ্য সহকারি সোনঙ্গ অসাধারণ বুদ্ধি, ধৈর্য ও সাহসের সঙ্গে শিশু অজিত সিংহকে শত্রুর কবল থেকে মুক্ত করে মাড়োয়ারে ফিরিয়ে আনলেন। ১৫ ই জুলাই আওরঙ্গজেব দিল্লির কোতোয়ালের অধীনে বাদশাহী রক্ষীবাহিনী পাঠিয়ে অজিত সিংহ ও রাণীকে কয়েদ করার চেষ্টা করেছিলেন।
এর থেকে অজিত ও রাণীকে মুক্ত করতে রাঠোররাও রণকৌশল সাজালো। বাদশাহী সৈন্য রাণীদের শিবির ঘেরাও করতেই যোধপুরী সামন্ত রঘুনাথ ভাটি একশোজনের যোদ্ধাদল নিয়ে ছুটে গিয়ে তাদের আক্রমণ করলেন। যেই মোগল সৈন্য পিছু হঠলো, অমনি দুর্গাদাস দুই রাণীকে পুরুষের ছদ্মবেশ পরিয়ে ঘোড়ায় চাপিয়ে শিশু অজিতকে নিয়ে বাকি রাঠোর সৈন্যদের নিয়ে যোধপুরের দিকে ছুটলেন।
এদিকে রঘুনাথ ও তাঁর সঙ্গীরা দেড় ঘণ্টা ধরে যুদ্ধ করে মোগলদের আটকে রেখে শেষে সবাই নিহত হলেন। ওদিকে ততক্ষণে দুই রাণীসহ শিশুপুত্র অজিতকে নিয়ে দুর্গাদাসের দল যোধপুরের দিকে পাঁচ ক্রোশ পথ এগিয়ে গেছে।
মোগল সৈন্য ফের তাদের পিছু নিতেই রাঠোর যোদ্ধা রণছোড়দাস যোধা তাদের আরও দেড় ঘণ্টা আটকে রেখে প্রাণ দিলেন। এরকম তিন বার ঘটলো।
শেষে মোগল বাহিনী ক্লান্ত হয়ে হাল ছেড়ে দিয়ে দিল্লি ফিরে গেল। এদিকে শিশুপুত্র অজিত ও দুই রাণীকে নিয়ে দুর্গাদাস রাঠোর ২৩ শে জুলাই মাড়োয়ার পৌঁছলেন। এই ঘটনায় একদিকে যেমন আওরঙ্গজেবের অপচেষ্টা ব্যর্থ হলো, অন্যদিকে তেমনি রাজা ও নেতাকে দেশে পেয়ে রাঠোররা নতুন উদ্যমে মোগলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলো। শুরু হলো রাজপুতানার স্বাধীনতা যুদ্ধ।
রাজপুতানার এই স্বাধীনতা সংগ্রাম ত্রিশ বছর ধরে বাদশাহ আওরঙ্গজেবের বিপদ হয়ে দাঁড়ালো। এরপর ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দে রাজপুতানার রাঠোর বিদ্রোহের আগুন জ্বলতে দেখতে দেখতেই মারা গেলেন। এর দু'বছর পর ১৭০৯ খ্রিস্টাব্দে আওরঙ্গজেবের পুত্র বাহাদুর শাহের আমলে অজিত সিংহ তাঁর হারানো পিতৃরাজ্যের উত্তরাধিকারী হিসেবে স্বীকৃত হলেন।
তথ্যসূত্র:
1). The Oxford History of India: Vincent A. Smith.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
In publishing and graphic design, Lorem ipsum is a placeholder text commonly used to demonstrate the visual form of a document or a typeface without relying on meaningful content. Lorem ipsum may be used as a placeholder before final copy is available. test