বর্তমানে যে সিংহবাহিনী দশভূজা দুর্গা প্রতিমার পুজো হয়, প্রাচীন বাংলায় তা ছিল না। তখন দেবী দুর্গার সঙ্গে কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতী---কেউই ছিলেন না। সে সময় পুজো হতো পূর্ণ ঘটে, দেবীকে আবাহন করা হতো যন্ত্র ও ঘটে এবং পুজো হতো ভদ্রকালীর। তাই দুর্গাপুজোর আদি রূপটিকে চিনতে আমাদের পুত্র-কন্যা পরিবৃতা দশভূজাকে বাদ দিয়ে এখন ওই ঘট ও যন্ত্রের দিকেই দৃষ্টি রাখতে হবে আমাদের এবং মনে রাখতে হবে, যন্ত্র ও ঘটই হলো দুর্গাপুজোর প্রধানতম অঙ্গ।
দুর্গাপুজোর যন্ত্রটির নাম "সর্বতোভদ্রমণ্ডল।" এই যন্ত্রের মূল কথা হলো, অষ্টদল পদ্ম ও বীথিকা। ওই বীথিকার নাম "কল্পলতিকা।"
এখন দেখা যাক, তন্ত্রে এই পদ্ম ও বীথিকার গুরুত্ব কি? দেখা যাচ্ছে, শুধুমাত্র "সর্বতোভদ্রমণ্ডল" নয়, সমস্ত তন্ত্র যন্ত্রেরই মূল বিষয়বস্তু হলো এই পদ্ম ও বীথিকা। আসলে তন্ত্রের এই যন্ত্রে পদ্ম বা অষ্টদল পদ্ম হলো নারী জননাঙ্গের প্রতীক। আর এই পদ্মকে ঘিরেই রয়েছে বীথিকা। নারী জননাঙ্গের তান্ত্রিক নাম "লতা।"
সুতরাং, যন্ত্রের মধ্যে অষ্টদল পদ্মকে ঘিরে রয়েছে যে বীথিকা, আসলে তার মধ্যে রয়েছে নারী অঙ্গের জননশক্তির স্পর্শে প্রকৃতিকে ফলপ্রসূ করার পরিকল্পনা।
এবার আসি ঘট পরিকল্পনার কথায়। আগেই বলেছি, "সর্বতোভদ্রমণ্ডল"-এর অর্থ হলো, নারী জননাঙ্গ। আর এই সর্বতোভদ্রমণ্ডল যন্ত্রের ওপর থাকে ঘট এবং ঘটের গায়ে থাকে সিঁদুর পুত্তলিকা। আসলে এটি হলো মানুষের প্রজনন ক্রিয়ার একটি পূর্ণাঙ্গ নকল করার আয়োজন। ঘট স্থাপনের মধ্যে নারী জনন অঙ্গের স্পর্শে প্রকৃতিকে ফলবতী করার পরিকল্পনাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবার চেষ্টা।
আর শুদ্ধ মৃত্তিকায় পঞ্চশস্য নিক্ষেপ করা হয়, যার মধ্যেও রয়েছে ফসল ফলানোর মহড়া। আসলে এটি মাটিতে শস্য বোনার প্রতীক। সুতরাং, দেখা যাচ্ছে, দুর্গাপুজোর প্রধানতম অঙ্গ হচ্ছে যন্ত্র ও ঘট। এটি কৃষির আবিষ্কার পর্যায়ের এক আদিম বিশ্বাস এবং এটিই হলো দুর্গাপুজোর বিষয়বস্তু। আসলে এর মধ্যে রয়েছে আদিম এক জাদু বিশ্বাস। বাস্তবের কৃষি কাজ পদ্ধতিকে একটি প্রতীকে যন্ত্র ও ঘটে ধরে তাতে কামনা সফল করার কল্পনাই হলো দুর্গাপুজোর প্রাচীনতম বিষয়।
দেখা গেল, দুর্গাপুজো হয় যে ঘট ও যন্ত্রে, সেই যন্ত্র হচ্ছে নারী জননাঙ্গের প্রতীক, যাতে আছে অষ্টদল পদ্ম। পদ্ম হচ্ছে নারী জননাঙ্গ।"পদ্মযোনী ব্রহ্মা" কথাটি এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য। আসলে পুরোটাই হচ্ছে ঊর্বরা শক্তির প্রতীক। অন্ন অর্থাৎ খাদ্যই হচ্ছে মানুষের বেঁচে থাকার আবশ্যিক উপাদান। তাই প্রাচীনকাল থেকেই অন্ন বা খাদ্য উৎপাদনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
তন্ত্রে এক ধরণের চিহ্নের ব্যবহার আছে, সেগুলির নাম "যন্ত্র।" এই যন্ত্র দু'রকমের---পুজা যন্ত্র ও ধারণ যন্ত্র। পূজা যন্ত্রে যে দেবতার পুজো করতে হবে, সেই দেবতার যন্ত্র এঁকে তার পুজো করা হয়। একে বলে পূজা যন্ত্র। অন্যদিকে, যে যন্ত্র এঁকে শরীরে ধারণ করা হয়, তার নাম ধারণ যন্ত্র। সাধারণত তালপাতায় দেবতার যন্ত্র এঁকে তা শরীরে ধারণ করা হয়। তন্ত্র মতে কয়েকটি সিদ্ধ যন্ত্র হলো---গণেশ যন্ত্র, শ্রীরাম যন্ত্র, নৃসিংহ যন্ত্র, গোপাল যন্ত্র, কৃষ্ণ যন্ত্র, শিব যন্ত্র, মৃত্যঞ্জয় যন্ত্র ইত্যাদি। বহু যন্ত্রের সঙ্গে যন্ত্র সংযুক্ত দেবতাটির আশ্চর্য রকম বিরোধ দেখা যায়। কারণ, উপরোক্ত দেবতারা সবাই পুরুষ, কিন্তু তাঁদের যন্ত্রগুলি নারী জননাঙ্গের প্রতীক। এক্ষেত্রেও সেই উৎপাদনশীলতার ধারণা।
"তন্ " ধাতুর ওপর "ষ্ট্রন্" প্রত্যয় করে হয় "তন্ত্র।" তনোতি তন্যতে বা তন্ ষ্ট্রন্।"তন্" ধাতুর অর্থ---বিস্তৃত করা। বংশ বিস্তারের একটি মুখ্য অর্থ হচ্ছে---তন্+ অয়ট্ = তনয়। আবার সম্ +তন্ +ঘঞ্= সন্তান। মনিয়ার উইলিয়ামস জানাচ্ছেন, পুরোনো পুঁথিপত্রে তন্ত্রের প্রজননার্থক ব্যবহার আছে। শুধু প্রজননই নয়, তন্ত্রের আক্ষরিক অর্থের মধ্যেও খাদ্য উৎপাদনের ইঙ্গিত মেলে। তাহলে "তন্" ধাতুর অর্থ যে "বিস্তৃত করা", তা শস্য উৎপাদন বৃদ্ধিও বোঝায়। আবার তন্ত্রের গৌণ অর্থ হলো, বয়ন কর্ম, যা কৃষিবিদ্যার পাশাপাশি মেয়েদেরই কৃষির আনুষঙ্গিক আবিষ্কার। আজও গ্রামের মেয়েরা নিজেদের বাড়ির উঠোনে বিভিন্ন শাক-সব্জির বীজ পুঁতে "কিচেন গার্ডেন" তৈরি করেন। আর বিভিন্ন রকম সেলাই-ফোঁড়াই করেন। এই তন্ত্রই ছিল একসময় মানুষের জীবন সংগ্রামের অঙ্গ এবং উৎপাদন কৌশলের সহায়ক।
প্রাচীন প্রচলিত যে তন্ত্রধর্ম, সেখানে আছে মদ্য ও মৈথুনের ব্যবহার। মদ্য বা মদ মানুষের ক্লান্তি দূর করে। একসময় বাংলার গ্রামের খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষেরা কাজের শেষে মদ্যপান করতো, যেটা তাদের সমাজের চোখে দোষের ছিল না। তারা গৃহস্থের কাছে প্রকাশ্যেই দোকানে মদ খেতে যাবার জন্য পয়সা ও মুড়ি চাইতো। সুতরাং, শ্রমের জোরে কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখতে স্বাভাবিকভাবেই তন্ত্রধর্মে মদের প্রচলন ছিল।
মাছও শুভ প্রতীক। বিয়ে বাড়িতে বর যখন কনের বাড়িতে যায়, তখন তার বরযাত্রীর দলে মাছ থাকে। সেটি কনের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে টাঙিয়ে দেওয়া হয়। আবার মৈথুনও হচ্ছে সৃষ্টির প্রতীক। আর এসব বাস্তব বস্তুর ব্যবহার নিয়েই তন্ত্র। প্রত্নতত্ত্ববিদ স্যার জন মার্শাল হরপ্পায় একটি আশ্চর্য সীল আবিষ্কারের কথা জানিয়েছেন। ওই সীলটির এক পিঠে রয়েছে একটি নারী মূর্তি। এই নারীর পা দুটি দু'পাশে সরানো এবং তার গর্ভের ভেতর থেকে একটি লতা গজিয়েছে। সীলটির গায়ে ছয় অক্ষরে কিছু লেখা আছে, যার পাঠোদ্ধার হয়নি।
এই সীলের নারী চিত্রটির পিছনে রয়েছে এক আদিম বিশ্বাস এবং যার অর্থ হচ্ছে, নারীদেহ থেকেই আদি শস্যের উদ্ভব।
দুর্গার আরেক নাম "শাকম্ভরী।" মার্কণ্ডেয় পুরাণে দেবী চণ্ডী জানাচ্ছেন, ---
"ততোহহমখিলং লোকমাত্মদেহসমুদ্ভববৈ:
ভবিষ্যামি সুরা: শাকৈরাবৃষ্টৈ: প্রাণধারকৈ: । ।
শাকম্ভরীতি বিখ্যাতিং তদা যাস্যাম্যহং ভুবি। ।"
অর্থাৎ, বর্ষাকালে নিজদেহ সমুদ্ভুত প্রাণধারক শাকের সাহায্যে সারা জগতের আমি পুষ্টি সরবরাহ করবো এবং তখন বিখ্যাত হবো শাকম্ভরী নামে। আর শাকম্ভরী বলেই দেবী দুর্গা হলেন অন্নদা বা অন্নদাত্রী অন্নপূর্ণা।
তাই স্বাভাবিকভাবেই দুর্গাপুজোর সঙ্গে ফসলের, বিশেষত: পাকা ফসলের যোগ রয়েছে। দুর্গাপুজোর আগে হয় "বড়-ষাট" বা বড় ষষ্ঠী পুজো। এই পুজোয় লাগে বাঁশের তৈরি নতুন ডালা, বিভিন্ন রকম ফুল, বিশেষ করে কেয়া ফুল এবং সেই সঙ্গে নতুন ধানের থোড় দিয়ে পূর্ণ করা হয় সেই ডালা। তাই গবেষক রমাপ্রসাদ চন্দ-এর মতে, দুর্গা আদিতে ছিলেন শস্যদেবী। আর সেজন্যই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের শস্যদেবীদের মতো পাকা ফসলের সময়টিতেই হয় দুর্গাপুজোর আয়োজন। দুর্গাপুজোর আরেকটি প্রধান অঙ্গ হলো নব পত্রিকার পুজো। নবপত্রিকার ঘটের ওপর সাজানো থাকে রম্ভা, কচ্চি, হরিদ্রা, জয়ন্তী, বেল, ডালিম, অশোক, মান ও ধানের পাতা। এই নয়টি উদ্ভিদের প্রত্যেকটিকেই এক-একজন দেবী হিসেবে কল্পনা করা হয়। এখানেও উদ্ভিদ জগতের সঙ্গে দেবী মাহাত্ম্যের যোগাযোগ স্পষ্ট।
শাক্তরা সকালে ঘুম থেকে উঠে কুলবৃক্ষকে প্রণাম জানান। এটিও উদ্ভিদ জগতের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগের প্রমাণ।
যে দুর্গাকে আমরা রণচণ্ডী মহিষাসুরমর্দিনী রূপে চিনি, সেই রূপ পরবর্তীকালের সংযোজন। কৃত্তিবাসী রামায়ণ অনুসারে রাবণ বধের জন্য রামচন্দ্র বর প্রার্থনা করছেন রণচণ্ডী দুর্গার কাছে। কিন্তু এই উপাখ্যানটি মূল বাল্মীকি রামায়ণে নেই। মূল রামায়ণে আছে, রাবণ বধের জন্য রামচন্দ্র সূর্যের কাছে বর প্রার্থনা করছেন। এর থেকে প্রমাণিত হয়, দুর্গার রণচণ্ডী মূর্তির ভাবনা পরবর্তীকালের রচনা।
মার্কণ্ডেয় পুরাণের "দেবী মাহাত্ম্য" রচিত হয় গুপ্ত যুগে। ভারতে এই সময় দুর্ধর্ষ হূন আক্রমণ ঘটে আর সে আক্রমণ প্রবলভাবে প্রতিরোধ করেছিলেন যুবরাজ স্কন্দগুপ্ত। এই আবহে রচিত দেবী মাহাত্ম্যে তাই দেবী চণ্ডী দেখা দিলেন দুর্গতিনাশিনী দুর্গারূপে। এই রূপই এখন মণ্ডপে মণ্ডপে পূজিতা হচ্ছেন।
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
In publishing and graphic design, Lorem ipsum is a placeholder text commonly used to demonstrate the visual form of a document or a typeface without relying on meaningful content. Lorem ipsum may be used as a placeholder before final copy is available. test