মৌর্য ভারতের পথ ও পথ নিরাপত্তা

গলিপথ থেকে রাজপথ---'পথ' নিয়ে এখন কত না পথের পাঁচালি! পথকে নিজের কব্জায় রাখা মানে শত্রুকে বশে রাখা, মৌর্য ভারতে এই পথনীতিই অনুসৃত হয়েছিল। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ছাড়াও পথ দিয়েই সেনাবাহিনী, দূত, চর, অস্ত্রশস্ত্র, যুদ্ধরথ---সবকিছুই নিয়ে যাওয়া হতো। তাই রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এই পথ।
মেগাস্থিনিসের লেখায় মৌর্য ভারতের রাজপথের বৃত্তান্ত আছে, যে প্রশস্ত পথ বিস্তৃত ছিল রাজধানী পাটলিপুত্র থেকে সিন্ধু উপত্যকা পর্যন্ত।
রাজপথ ও বাণিজ্যপথগুলি বিভিন্ন নামে পরিচিত ছিল, যেমন, ---
১) মানুষের পায়ে চলা পথ,
২) যানবাহন যোগে মানুষের যাতায়াত পথ,
৩) ভারবাহী পশুদের চলাচল পথ এবং অবশ্যই
৪) রাজপথ।
রাজপথ ছিল ৪ দণ্ড অর্থাৎ ৩২ ফুট চওড়া। রাজকীয় কাজের জন্য এই রাজপথ ব্যবহৃত হতো। রাজকীয় কাজের সময় রাজার সৈন্যরা খোলা তরবারি হাতে লোকজনের ভীড় নিয়ন্ত্রণ করতো। রাজকাজে ব্যবহৃত হতো বলে এই পথের নাম ছিল "রাজপথ।" প্রতিটি নগরে ৬ টি করে রাজপথ থাকতো---উত্তর-দক্ষিণে ৩ টি এবং পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত ৩ টি।

এছাড়াও রথ চলাচলের জন্য দু'রকমের পথ ছিল, বড়ো রথের জন্য "রথ্যা" এবং ছোট রথ চলাচলের জন্য "রথপথ।" "রথ্যা" ছিল ৪ দণ্ড অর্থাৎ ৩২ ফুট চওড়া আর "রথপথ" ছিল ৫ অরত্নী অর্থাৎ ১০ ফুট চওড়া।
আর ছিল, ---
১) পশুপথ: ৪ অরত্নী অর্থাৎ ৮ ফুট চওড়া এই পথ সাধারণ গবাদিপশুর জন্য ব্যবহৃত হতো।
২) মহাপশুপথ: বড়ো বড়ো পশুর জন্য ব্যবহৃত হতো এই পথ।
৩) ক্ষুদ্র পশুপথ: ছোট ছোট পশুদের চলাচলের জন্য ব্যবহৃত এই পথ ২ অরত্নী অর্থাৎ ৪ ফুট চওড়া ছিল।
৪) খরোষ্ট্র পথ: সব জমির ওপর দিয়ে বছরের সব ঋতুতেই গাধা ও উট চলাচলের জন্য ব্যবহৃত পথ।
৫) মনুষ্য পথ: শুধুমাত্র পায়ে হেঁটে মানুষের চলাচলের জন্য ২ অরত্নী অর্থাৎ ৪ ফুট চওড়া ছিল এই পথ।
৬) অংশপথ: পায়ে চলা আরও সংকীর্ণ পথ।
৭) চক্রপথ: যানবাহন চলাচলের জন্য নির্দিষ্ট পথ।
৮) বণিক পথ: উপরোক্ত চক্রপথ, মনুষ্য পথ, অংশপথ ও খরোষ্ট্র পথগুলি "বণিক পথ" নামেও পরিচিত ছিল। এইসব পথগুলি ছিল অনেক দীর্ঘ এবং সব ঋতুতেই সব মাটিতেই এই পথ দিয়ে চলাচল করা যেতো।
৯) রাষ্ট্রপথ: ৪ দণ্ড অর্থাৎ ৩২ ফুট চওড়া এই পথ দিয়ে বিভিন্ন জনপদে যাওয়া যেতো।
১০) বিবীতপথ: ৪ দণ্ড অর্থাৎ ৩২ ফুট চওড়া এই পথ দিয়ে পশুচারণভূমির দিকে যাওয়া যেতো।
১১) দ্রোণমুখ পথ ও স্থানীয় পথ: এই পথ ছিল ৪০০ ও ৮০০ গ্রামের কেন্দ্রে অবস্থিত দুর্গে যাবার পথ ছিল এগুলি।
১২) সয়োনীয় পথ: শস্যক্ষেত্রে যাবার পথ।
১৩) ব্যূহ পথ: সেনানিবাসের দিকে যাবার পথ।
১৪) গ্রাম পথ: গ্রামের ভেতর দিয়ে যাবার পথ।
১৫) বনপথ: বনে যাবার পথ। চওড়া ছিল ৩২ ফুট।
১৬) হস্তিক্ষেত্র পথ: হাতি থাকতো যে বনে, সেখানে যাবার জন্য ১৬ ফুট চওড়া পথ।
১৭) সেতু পথ: সেতু বা বাঁধের দিকে কিংবা উচ্চ ভূমির দিকে যাবার জন্য ৩২ ফুট চওড়া পথ।
১৮) রথচর্যাসঞ্চার পথ: তালগাছের গুঁড়ি, তক্তা কিংবা পাথরে বাঁধানো রথ চলাচলের পথ।
১৯) প্রতোলী: দুটি বাড়ির মাঝখানের পথ।
২০) চার্যা: ৮ কিংবা ১৬ ফুট চওড়া পথ।
২১) দেব পথ: মন্দিরে যাবার পথ।
২২) স্কন্ধ পথ: শুধুমাত্র একজন মানুষ চলাচলের পথ।
২৩) উপাধ্য: মাঠের ভেতর দিয়ে যাতায়াতের জন্য অতি সরু পথ।
২৪) বিশিখা: নগরের মাঝে রাজকীয় স্বর্ণকারের কারখানায় যাবার পথ।
২৫) শ্মশান পথ: শ্মশানে যাবার পথ।
পথিকদের পথে বিশ্রামের জন্য পথের ধারে রাষ্ট্রের উদ্যোগে ছায়াদানকারী গাছ লাগানো হয়েছিল। সেই সঙ্গে ছিল পানীয় জলের ব্যবস্থা। আর আহার ও রাত্রিযাপনের জন্য ছিল পান্থশালা। এই ব্যবস্থা অশোকের আগেই চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের আমলে ছিল, "অর্থশাস্ত্র " তার প্রমাণ। পথের ওপর রাষ্ট্রের নজর ছিল। পথে যাতে কেউ বাধা সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য শাস্তির ব্যবস্থাও ছিল।
কেউ পথ বন্ধ করলে কিংবা পথে খাল খুঁড়ে দিলে তার কি রকম অর্থদণ্ড হতো, সে সম্পর্কে কৌটিল্য একটি হিসেব দিয়েছেন, যেমন, ---
পথ: অর্থদণ্ড বা জরিমানার পরিমাণ
১) মনুষ্য পথ ও ক্ষুদ্র পথ: ১২ পণ
২) মহাপশুপথ: ২৪ পণ
৩) হস্তিক্ষেত্র পথ: ৫৪ পণ
৪) সেতুপথ ও বনপথ: ৬০০ পণ
৫) দ্রোণমুখ পথ: ৫০০ পণ
৬) স্থানীয় পথ, রাষ্ট্রপথ, বিবীতপথ: ১০০০ পণ
৭) গ্রামপথ ও শ্মশানপথ: ২০০ পণ।
আরো পড়ুন : কাবুল যুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে আরবের পিকক্ আর্মি, আরব অন্তর্দ্বন্দ্ব ও অপরাজেয় রাটবিল
এছাড়া উপরের পথের ওপর যদি কেউ গভীরভাবে খুঁড়ে গর্ত করলে, তার জরিমানার পরিমাণ উপরের চার গুণ হারে দিতে হতো। এভাবেই মৌর্যযুগে গড়ে উঠেছিল এক সুশৃঙ্খল সমৃদ্ধ ভারতবর্ষ।
তথ্যসূত্র:
১) প্রাচীন ভারতে দণ্ডনীতি: যোগেন্দ্রনাথ তর্ক-সাংখ্য বেদান্ততীর্থ, প্রাচ্যবাণী, ১৩৫৬ বঙ্গাব্দ
২) কৌটিলীয় অর্থশাস্ত্র: রাধাগোবিন্দ বসাক, জেনারেল প্রিন্টার্স, কলকাতা, ১৯৬৪.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.
Anim pariatur cliche reprehenderit, enim eiusmod high life accusamus terry richardson ad squid. 3
wolf moon officia aute, non cupidatat skateboard dolor brunch. Food truck quinoa nesciunt laborum
eiusmod. Brunch 3 wolf moon tempor, sunt aliqua put a bird on it squid single-origin coffee nulla
assumenda shoreditch et. Nihil anim keffiyeh helvetica, craft beer labore wes anderson cred
nesciunt sapiente ea proident. Ad vegan excepteur butcher vice lomo. Leggings occaecat craft beer
farm-to-table, raw denim aesthetic synth nesciunt you probably haven't heard of them accusamus
labore sustainable VHS.